সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ন

গাংনীর ডাঃ রাজা’র মুক্তির দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়

তোফায়েল হোসেন
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৬৪৯ বার পঠিত

মেহেরপুরের গাংনীর স্বনামধন্য রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ও গরিবের চিকিৎসক নামে পরিচিত ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা’র মুক্তির দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে তুমুল ঝড়। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) পেটে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের মামলায় ডাঃ মিজানুর রহমান, ডাঃ তাপস কুমার ও ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা বিজ্ঞ আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক তারিক হাসান ডাঃ মিজানুর রহমান ও ডাঃ তাপস কুমারের জামিন মঞ্জুর করেন এবং ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা’র জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এ আদেশের খবর স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় স্থানীয়দের প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা’র ত্রুটি মার্জনা করে দ্রুত মুক্তির দাবি জানান তারা।

সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন মন্তব্যকারীরা জানান, ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা একজন সৎ, দাতা ও পরোপকারী ব্যক্তি। চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের কাছে তিনি গরিবের ডাক্তার হিসেবেও উপাধি লাভ করেছেন। ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজাকে দ্রুত জামিনসহ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ারও দাবি জানান মন্তব্যকারীরা।

প্রসঙ্গত, মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে বাচেনা খাতুন (৫০) নামে এক নারীকে গত ২০০২ সালের ২৫ মার্চ গাংনীর রাজা ক্লিনিকে
পিত্তথলিতে স্টোন জনিত সমস্যায় অপারেশন কর হয়। অপারেশনের পর পেটের মধ্যেই প্রায় পাঁচ ইঞ্চি লম্বা একটি সিজারিয়ান ইন্সট্রুমেন্ট “কাঁচি” রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর রাজশাহীতে গিয়ে ধরা পড়ে বিষয়টি। আবারও অপারেশন করে সেই কাঁচি বের করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। অন্যদিকে, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী নারীর নাম বাচেনা খাতুন (৫০)। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঢিৎলা ইউনিয়নের নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী।

ভুক্তভোগী অসুস্থ বাচেনা খাতুন জানান, অপারেশনের পাঁচ থেকে ছয় মাস পর পেটে ব্যথা শুরু হলে তিনি রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন রাজার শরণাপন্ন হন। ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজার ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না দেখে বাচেনা খাতুন একটু ভালো থাকার আশায় কখনো চুয়াডাঙ্গা, কখনো আলমডাঙ্গা কখনো গ্রাম্য ডাক্তার এমনকি যখন যে যা বলেছে সেখানেই ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কয়েকদিন আগে পেটে অসহনীয় ব্যথা শুরু হলে গত ০২/০১/২০২২ ইং তারিখে রাজশাহীর দি ইউনাইটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। পরে ওই ক্লিনিকে এক্স-রে করে বাচেনা খাতুনের পেটের মধ্যে একটি কাঁচি রয়েছে দেখতে পান চিকিৎসক। পরে চিকিৎসক রোগীর পোশাক পরিবর্তন করে একাধিকবার এক্স-রে করে পেটের মধ্যে কাঁচি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেই সাথে তাকে পুনরায় দ্রুত অপারেশন করে কাঁচি বের করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

পেটের মধ্যে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুন এর সাথে যোগাযোগ করেন। ওই সময় ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা নিজ খরচে পুনরায় অপারেশন ও চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করেন।

ওই ঘটনায় রাজা ক্লিনিক এর পরিচালক ও চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন রাজা জানান, “মানুষ ভুলের উর্ধে নয়, মানুষের ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক”। তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দোষ এড়ানো যায়না। যদিও ডাঃ মিজানুর রহমান ভুক্তভোগী রোগী বাচেনা খাতুনের অপারেশনটি নিজ হাতে করেছিলেন এবং তিনি নিজে ও ডাঃ তাপস কুমার ওই সময় সহযোগী হিসেবে ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 gangnisongbad.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
ThemesBazar-Jowfhowo