মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার হাট-বাজার জনসম্মুখে ও ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে সরাসরি দরপত্র বাক্স (টেন্ডার বক্স) খোলা এবং দরপত্রদাতাদের খাম খোলার স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গাংনী পৌরসভার হাট বাজার ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে এ পৌরসভা কার্যালয়ে এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর ২টায় পৌরসভা ভবনে রাখা দরপত্র বাক্সের সিলগালা করা তালা খোলা হয়। এসময় পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, কাউন্সিলরবৃন্দ, গাংনী প্রেস ক্লাব সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজগর আলী, পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রাহিবুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা আনোয়ার পাশা, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হাবীব, পৌর সচিব শামীম রেজা, উপ সহকারি প্রকৌশলী জামিরুল ইসলাম, প্রধান সহকারি আসলাম হোসেন, উচ্চমান সহকারি জামিরুল ইসলাম টিক্কা ও পৌরসভা কর্মকর্তা কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ ও দরপত্র দাতাদের কয়েকজনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বাক্সের মধ্যে পাওয়া যায় ১০টি মুখবন্ধ খাম। এর মধ্যে গাংনী হাটের (সবজি বাজার ও মৎস্য আড়ত) ৪টি, বাঁশবাড়ীয়া হাটের ৩টি এবং পৌর জবেহখানার ৩টি দরপত্র। দরপত্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভা সভা কক্ষে খোলা হয়।
প্রথমে খোলা হয় গাংনী হাটের দরপত্র। দাখিলকৃত ৪টি দরপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা গাংনী কাঁচা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাহাদুল ইসলাম। তিনি দর দিয়েছেন ৪২ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা। সিডি দাখিল করেছেন ২২ লক্ষ টাকার। এ হাটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা হলেন গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন। তিনি দর দিয়েছেন ৪১ লক্ষ টাকা। সিডি দাখিল করেছেন ১২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার। তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা গোপালনগর গ্রামের কাওছার হামিদ। তিনি ৩০ লক্ষ টাকার দর দিলেও কোন সিডি দাখিল করেননি। অপর দরপত্রদাতা গাংনী থানাপাড়ার ছোটন আলী। তার দর ৪৫ হাজার টাকা। সিডি ছয় হাজার টাকার।
পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, দরপত্র নীতিমালার আলোকে দরদাতা যে দর দাখিল করবেন তার ৩০ ভাগ টাকা ব্যাংকের সিডির মাধ্যমে দরপত্রের সাথে দাখিল বাধ্যতামূলক।
এদিকে বাঁশবাড়ীয়া হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা সামসুদ্দীন শেখ। তার দর ২ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা। সিডি দিয়েছেন ৮০ হাজার টাকার। শিশিরপাড়ার মাহমুদ হাসিব ও কুতুব উদ্দীন দরপত্র দাখিল করলেও তারা কোন সিডি দাখিল করেননি।
এদিকে গাংনী পৌর জবেহখানার তিন জন দরপত্র দাখিলকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ দারদাতা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন। তার দর ৬৩ হাজার টাকা। সিডি দাখিল করেছেন ১৯ হাজার টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা চৌগাছা গ্রামের ইন্টুরাজ। তার ৪০ হাজার টাকা এবং সিডি ৪ হাজার টাকা। অপর দরপত্র দাতা গাংনীর ভিটাপাড়ার হাসানুজ্জামান দর দিয়েছেন ৪৫ হাজার টাকা এবং সিডি ৬০ হাজার টাকা।
দরপত্র কার্যক্রমে মেয়র আহম্মেদ আলী বক্তৃতায় বলেন, এর আগের বছর বিদায়ী মেয়র যে সিডি জমা নিয়েছিলেন তা স্ক্যান করে জালিয়াতি করা। এজন্য এবারের সিডিগুলো ভালোভাবে যাচাই করা হচ্ছে। ওই জাল সিডির বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থার দিকে যাবে পৌর পরিষদ।
দরপত্র কার্যক্রম কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে কাজটি করেছে পৌর পরিষদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর গাংনী হাটের দর ৬৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ২২ লাখ টাকা। তবে ওই হাটের রেজুলেশন, সিডি ঠিক নেই। কাগজপত্রে সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিদের সই স্বাক্ষরও নেই।
তিনি বলেন, এর আগে পৌরসভার হাট বাজার ইজারার বিষয়ে অনেক বদনাম আছে। তাই আমি স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পৌরসভার সকল কাজে সহযোগিতা করার জন্য তিনি পৌরবাসীর প্রতি আহবান জানান।