“মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের এ উক্তি সবার জন্য স্বীকৃত। হ্যাঁ কেহই মরতে চায়না এ ধরণী থেকে। অথচ আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নিতে চেয়েছিল হাবিবুর। তিলে তিলে মরার চেয়ে ঢের ভাল বলে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছিলেন তিনি। দুরারোগ্য ব্যাধি গ্যাঙরিনে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। দুবেলা দুমুঠো যার ভাত জোটেনা চিকিৎসা করাবে কিভাবে ? জীবন বাঁচাতে হাবিবুর সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা গ্রামের হাবিবুর (৫০) পেশায় ছিলেন একজন ভ্যান চালক। বছর তিনেক আগে হঠাৎ কোমরে যন্ত্রণা শুরু হয়। তার পর বাম পা ও ডান হাত যন্ত্রণা দেখা দেয়। এর কিছুদিন পর পচন ধরে। স্থানীয় তাহের ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়ার পরও কোন উন্নতি না হওয়ায় ডান হাতের একটি ও বাম পায়ের একটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়েছে। এতেও সুস্থ হননি তিনি।
হাবিবুর জানান, সংসারে রয়েছে স্ত্রী ফরিদা খাতুন এক মেয়ে ও এক ছেলে। সংসারের ব্যয় বহনের জন্য ভ্যান চালাতেন তিনি। হাত ও পায়ের আঙ্গুল কেটে ফেলার কারণে আর সে কাজটি করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে ফরহাদ হোসেন স্থানীয় ভাটপাড়া মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছে। তার লেখাপড়ার খরচও বহণ করা যাচ্ছে না। পাড়া পড়শীরা সহযোগীতা করায় কোনমতে দিন চলে যাচ্ছে তাদের।
হাবিবুরের স্ত্রী ফরিদা খাতুন জানান, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলো হাবিবুর। গরু ছাগল যা ছিল সব বিক্রি করে আর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নিয়ে ২০ হাজার টাকা দিয়ে হাত পায়ের আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়েছে। এখন বাম ও ডান পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলতে হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাটু থেকে পা না কাটলে গোটা শরীরে পচন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসা করানোর কোন অর্থ নেই। চেয়ারম্যান মেম্বররা তাদের কোন খবরই নেন না।
প্রতিবেশী আলম হোসেন জানান, আগে হাবিবুর রহমান নিজেই মানুষকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে সাহায্য করতেন। এখন সে নিজেই অন্যের মুখোপেক্ষি। আয় রোজগারের কোন পথ নেই। গ্রামের লোকজন যতটুকু পারে সাহায্য করে। কিছুদিন আগে যন্ত্রণা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল হাবিবুর।
ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান জানান, তিনি বিষয়টি জানেন না। খোঁজখবর নিয়ে সরকারী সব সুবিধার ব্যবস্থা করবেন তিনি। দেশ-বিদেশের
কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ০১৭৩৭ ৯৩৯১৩৯ নম্বরটিতে যোগাযোগ বা বিকাশ করার অনুরোধ জানিয়েছেন অসুস্থ হাবিবুর ও তার পরিবার।