বসুন্ধরা গ্রুপের সংবর্ধনা ও সম্মান আমার ভবিষ্যতে চলার পথে উৎসাহ যোগাবে। বুসন্ধরা গ্রুপ দেশের প্রতিটি জেলা থেকে হাতড়ে বের করেছে তৃণমূল পর্যায়ে অবদান রাখা সংবাদকর্মীদের। বসুন্ধরা গ্রুপের দেয়া এই সম্মান মেহেরপুর তথা বাংলাদেশের সংবাদকর্মীদের জন্য গর্বের বিষয়। কাজের মূল্যায়ন পাওয়া যায় দেখে নিশ্চয়ই দেশের প্রতিটি জেলার সংবাদকর্মীরা তৃণমূল পর্যায়ে বর্তমান তথা আগামী দিনে অবদান রাখতে চেষ্টা করবে।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন হলে বসুন্ধরা মিডিয়া গ্রুপ আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১ প্রদান করা হয়। এসময় ৬৪ জন প্রবীণ সাংবাদিকদের প্রত্যেককে সম্মাননা ক্রেস্ট, সন্দপত্র, এক লক্ষ টাকার চেক ও উত্তরীয় পরানো হয়। অনুষ্ঠানে সম্মাননা পেয়ে এ প্রতিক্রিয়া জানান মেহেরপুরের প্রবীণ সাংবাদিক তোজাম্মেল আযম।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞ বুসন্ধরা গ্রুপের কাছে, আমাকে মূল্যায়ন করার জন্য। আমি বুসন্ধরা গ্রুপের কাছে দাবি রাখবো দেশের বিভিন্ন জেলায় যেসব সংবাদকর্মীরা তৃণমূল তথা দেশের জন্য সংবাদপত্রে যথেষ্ট অবদান রেখেছে। বর্তমানে অসহায় দিনযাপন করছেন তাদেরও মূল্যায়ন করার।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নাজমুল হক নাসিম, বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১ জুরিবোর্ড প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভির। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক তোজাম্মেল আযমসহ সারাদেশে ৬৪ জন প্রবীণ সাংবাদিক এবং ১১ জন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
মেহেরপুরের প্রবীণ সাংবাদিক তোজাম্মেল আযমের জন্ম ১৯৫৮ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারি জেলার গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদী পাড়ের কোদালকাঠি গ্রামে। তবে ১৯৬০ সাল থেকে তিনি মেহেরপুর জেলা শহরের কাথুলী সড়ক এলাকায় বসবাস শুরু করেন। পিতা মরহুম আবদুল গফুর ও মাতা মরহুমা ফাতেমা বেগমের বড় সন্তান তিনি। ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। দৈনিক যুগান্তরের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন তোজাম্মেল আযম। মেহেরপুর জেলার প্রথম সংবাদপত্র (১৯৮৫) সাপ্তাহিক পরিচয় ও দৈনিক আযম এর সম্পাদক ও প্রকাশক তিনি। তোজাম্মেল আযম কাজ করেছেন চ্যানেল ওয়ান টেলিভিশনে। এছাড়া দৈনিক প্রতিদিন, দৈনিক দেশ, দৈনিক বাংলা, দৈনিক জনকন্ঠ’র মত জনপ্রিয় সংবাদপত্রে মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধির কাজ করেছেন। শিশু প্রকাশের শিশু সাংবাদিকদের টিম লিডারের দায়ীত্ব পালন করেছেন। মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবে তিনি ৩য় বারের মত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে তিনি সংবাদকর্মীদের পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন এখনো।
২০০৭ সালে মেহেরপুর ভৈরবনদ পুনখনন দাবিতে সমাবেশ ও প্রতিকী খনন কর্মসুচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও তিনি পিছপা হননি কখনো।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি লেখালেখির মাধ্যমেও নিজেকে মেলে ধরেছেন। মেহেরপুরের সংস্কৃতি, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে মেহেরপুরের ভূমিকা নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হচ্ছে- নীলিমায় নীলিমায়, পরিচয় প্রকাশনা (১৯৮৭), মেহেরপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য, গতিধারা (২০০৯), মুক্তিযুদ্ধের কিশোর ইতিহাস: মেহেরপুর জেলা, তাম্রলিপি (২০১৭), মেহেরপুরের সংস্কৃতি ও লোক ঐতিহ্য, অন্বেষা (২০১৯), মুজিবনগর: যুদ্ধজয়ের উপাখ্যান, অন্বেষা (২০২১)।