কনক্রীট ব্লক মূলত বিল্ডিং এর দেয়াল তৈরির উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। সমসাময়িককালে সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে এ ধরনের পণ্যের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলেছে। কনক্রীট ওয়াল ব্লক সমূহ অতি পরিচিত ইটের তুলনায় অনেক বেশী সাশ্রয়ী।এটি অনেক বেশি শ্রম, শক্তি ও সময় বাঁচায়।
এ সমস্ত বিষয় বিবেচনায় রেখে মেহেরপুরের গাংনী পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব মালসাদহ গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী হোসাইন মোহাম্মদ মামুন নির্মাণ করেছেন কনক্রীট ব্লকের ঘর।
এলাকায় কনক্রীট ব্লকের ঘর নতুন হওয়ায় তা দেখার জন্য প্রতিনিয়ত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘরের অবকাঠামো ও সৌন্দর্য দেখে অনেকেই পরিবেশবান্ধব এ কনক্রীট ব্লকের ঘর তৈরীর চিন্তা করছেন।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী হোসাইন মোহাম্মদ মামুন জানান, কনক্রীট ব্লকের বিশেষত্ব হলো ইলেকট্রিক্যাল পাইপ বসানোর জন্য দেয়াল কাটা লাগে না। ইটের মতো অধিক পানি শোষণ করে না। এই ব্লক গাঁথুনীর কাজে ব্যবহারের আগে ইটের মতো পানিতে ভেজাতে হয় না। কনক্রীটের ব্লকে নোনা ধরে না, ঘামে না, ড্যাম্প হয় না, ফাঁঙ্গাস পড়ে না বলে এটি দীর্ঘস্থায়ী।
তাছাড়া, কনক্রীটের ব্লকে ইটের তুলনায় কম পুরুত্বের প্লাস্টারিং ব্যবহার করা হয়। বাড়ির ব্যক্তিগত ওজন ও নির্মাণ খরচ দুই-ই কমা লাগে। পরিবেশ বান্ধব এবং ভূমিকম্প সহনশীল।
সর্বোপরি কৃষি জমি ও বনজ সম্পদরে অপচয় রোধ করে। ব্লক ইট প্রস্তুত করতে কোন জ্বালানীর প্রয়োজন হয় না। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে না। সারা বছর ব্যাপী উৎপাদন করা সম্ভব। ব্লকের তৈরি ঘরে শব্দ শোষন ক্ষমতা বেশি, অগ্নি ও তাপ নিরোধক অধিক র্কাযক্ষম। স্থায়ত্বিকাল ও কাঠামোগত ভারসাম্য বেশ ভাল।
তিনি আরো জানান, ৩০% সিমেন্ট এবং ৭০% বালু, পাথর ও ব্লক মেডিসিন মিশিয়ে এই ব্লক তৈরী করা হয়েছে।
ব্লক তৈরি করতে তিনি মাত্র ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি মেশিন তৈরি করেছেন। মেশিন দুটির একটিতে ১৬x৮x৮ ফিট আরেক টিতে ১৬x৪x৮ ফিট ব্লগ তৈরি করা সম্ভব। তিনি তার ঘরটি তৈরি করার জন্য এই দুই ধরনের কনক্রীট ব্লক ব্যবহার করেছেন। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কনক্রীট ব্লকের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া প্রচলিত ইটের সমতুল্য কনক্রীট ব্লক মূল্যসাশ্রয়ী (৩০% কম) হওয়ার কারণে অধিকতর তাপ কুপরিবাহী। ফলে গরম ও শীতে ঘর আরামদায়ক ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়। ব্লকের ওজন কম ও সাইজে বড় হওয়ায় কম জনবল দিয়ে অতি দ্রুত সময়ে কাজ করা যায়। লবণাক্ততা না থাকার কারণে দেয়ালের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেই বললেই চলে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ বান্ধব কনক্রীট ব্লক পাওয়া যায়।
কুষ্টিয়া জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান জানান, ২০২৫ সালের পর মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরি করা যাবে না এ বিষয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গাংনী উপজেলার পূর্ব মালসাদহ গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী হোসাইন মোহাম্মদ মামুন কনক্রীট ব্লক ব্যবহার করে বিল্ডিং তৈরি করেছে জেনে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন। পরিবেশ বান্ধব কনক্রীট ব্লক ব্যবহারে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। সেই সাথে তিনি নিজে এসে বিল্ডিংটি পরিদর্শন করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।