মেহেরপুরের গাংনীতে দাফনের প্রায় দুই বছর পর তদন্তের জন্য আসাদুজ্জামান আসাদ (৪২) নামে এক ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেন। নিহত আসাদ উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের চান্দামারী গ্রামের মরহুম হাজী আব্দুল জলিল মাস্টারের ছেলে।
সোমবার (১৪ মার্চ ) বেলা ১১ টার দিকে আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেন এর উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করে চুয়াডাঙ্গা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।
এ সময় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু সাঈদ এর নেতৃত্বে একটি টিম সহযোগিতা করেন।
এ বিষয়ে নিহতের ভাই মাসুম বিল্লাহ মাসুম জানান, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রাম ও বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল পাড়ার মহিবুল ইসলামের মেয়ে মোনালিসা হক লোপা’র সাথে তার ভাইয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে জন্ম নেয় ৩ কন্যা সন্তান। লোপা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আর আসাদুজ্জামান একটি ঔষধ কােম্পানীর চাকুরীর সুবাদে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বসবাস করতেন।
২০২০ সালের ২৭ মার্চে রাত ৯টার দিকে আসাদুজ্জামানের স্ত্রী লোপা তার শশুর পরিবারকে মোবাইল ফোনে জানায় তার স্বামী স্ট্রোকে মারা গেছেন। কিন্তু সময় পার হওয়ার সাথে সাথে বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। বের হতে থাকে আসাদুজ্জামানের স্ত্রীর পরকীয়ার কাহিনী ও পরিকল্পিত খুনের বিষয়সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ফলে আসাদুজ্জামানের ভাই লিটন বাদী হয়ে মোনালিসা হক লোপা ও লোপার প্রেমিক ও বর্তমান স্বামী হুমায়ুন কবিরকে আসামি করে চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল, আমলী আদালতে পেনাল কোড ১২০-খ/৩০২/৩৪ ধারা মোতাবেক একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার -২১, তারিখঃ ২৫ জানুয়ারী ২০২২.
মামলার পরে মোনালিসা হক লোপা’র প্রেমিক ও বর্তমান স্বামী হুমায়ুন কবিরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে চুয়াডাঙ্গা জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
আসাদুজ্জামানকে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আসামী হুমায়ুন কবির আদালত তার দােষ স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তিতে সােমবার (১৪ মার্চ) কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হলাে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেন জানান, আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
এ সময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রবিন উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু সাঈদ জানান, তদন্তের স্বার্থে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।