মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের বিষপান করা গৃহবধু আসমানী খাতুন অবশেষে মারা গেছে। বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে অসুস্থবস্থায় উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামে পিতার বাড়িতে মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার খবর শুনে পাষন্ড স্বামী সাজিদুল ইসলাম, শ্বাশুড়ী মর্জিনা খাতুন ও ননদ টগর খাতুন পলাতক রয়েছে। গাংনী থানা পুলিশ গৃহবধু আসমানী খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। যার নম্বর -১৩, তারিখঃ ১৫/০৪/২০২১ ইং।
ঘটনাসূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের আরশেদ আলীর মেয়ে আসমানী খাতুনের সাথে সাহারবাটি গ্রামের ঢাকালী পাড়ার মরহুম আঃ রশিদের ছেলে সাজিদুল ইসলামের সাথে প্রায় ১৩ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুখে শান্তিতেই কাটছিল তাদের সংসার জীবন। সংসার চলাকালিন সময়ে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। যার নাম তুহিন (১২)। তুহিন স্থানীয় রুপায়ন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
তুহিন জানায়, তার পিতা বিদেশ থেকে এসে বর্তমানে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। তার পিতা অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক করার কারণে তার মায়ের উপর শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। সেই সাথে তার দাদী মর্জিনা ও ফুফু টগরও তার মায়ের উপর মানুষিক নির্যাতন করতো। ০৩/০৪/ ২০২১ ইং তারিখে তার মায়ের উপর সকলে মিলে নির্যাতন করে। ঘটনার দিন ০৪/০৪/২০২১ ইং তারিখে তুহিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দেখে তার মায়ের মুখে ফেনা ও অচেতন অবস্থায় ঘরে পড়ে আছে। সে তার দাদীকে বললে তার দাদি ঘরে ঢুকবেনা বলে জানায়। পরে তার পিতা এসে আসমানীকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় আসমানী বিষপান করেছে। তাকে বিষমুক্ত করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি দেখা দিলে আসমানী খাতুনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তিন দিন থাকার পর বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। পরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর অবস্থার অবনতি দেখা দিলে পুনরায় কুষ্টিয়া মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে তাকে আবার বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। বুধবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পিতার বাড়ীতে সে মৃত্যুবরণ করে। শিশু তুহিন অভিযোগ করে বলে তার মাকে তার পিতা, দাদী ও ফুফু সকলে মিলে মুখেবিষ ঢেলে মেরে ফেলেছে। সে আরো বলে আমার মায়ের গায়ে দাগ দেখলে সকলে বুঝতে পারবেন। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তুহিন তার মায়ের খুনীদের দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবি করেছে।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আসমানীর মরাদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। রির্পোট পেলে রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।