মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে নারী ঘটিত ও টাকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগর ও একই এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রী। শনিবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে গাংনী উপজেলা শহরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এর আগের দিন শুক্রবার (২৫ মার্চ) গাংনী উপজেলা শহরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মৎস্য চাষী মহাম্মদ আলী।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য চাষী মহাম্মদ আলী জানান, গত বছরে ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগরের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি পুকুর তিন বছরের জন্য লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন।
পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে বেশ সফলতাও পান তিনি। মাছ চাষে সফলতা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলী আজগর তাকে সরানোর জন্য নানা ভাবে ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেন।
অবশেষে তিনি ভাটপাড়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর বিষয়ে অপবাদ দিয়ে পরকীয়ার অভিযোগে সালিসের নামে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আদায় ও লিজকৃত পুকুরের মাছ জোরপূর্বক বিক্রির করার অভিযোগ তোলেন।
তিনি আরো জানান, অন্য এলাকায় বাড়ি হওয়ায় এবং আলী আজগরের প্রভাব দেখানোর কারণে আমি অপরাধী না হয়েও একপ্রকার বাধ্য হয়ে জরিমানার টাকা আলী আজগরের কাছে জমা দিয়েছি।
তিনি আরো জানান, ভাটপাড়া গ্রামে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে আলী আজগর ও তার লোকজন তাকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করেন। তাকে পুকুর লিজ দিয়ে আবার কেন সেই পুকুরের মাছ আত্মসাত করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তার কাছ থেকে ব্লাক মেইল করে টাকা নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ফেরত পেতে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে তার ভাল সম্পর্ক। তার স্বামীর অনুরোধে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে মোবাইল ফোনে তার প্রবাসী স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হয়। পরে সে ১০টি ঘুমের বড়ি খেয়ে সজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। এঘটনায় আমি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ৫/৬ দিন সেখানে থাকতে হয়েছিল। পরে বাড়ি ফিরে এলে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
এদিকে শনিবার (২৬ মার্চ) এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগর ও প্রবাসীর স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। মৎস্য চাষী মহাম্মদ আলী প্রবাসীর স্ত্রীকে অর্থ-সম্পদের লোভ দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই সম্পর্কের জের ধরে প্রবাসীর স্ত্রীকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রবাসীর স্ত্রী ও মহাম্মদ আলী পুকুর লিজ নিয়ে যৌথভাবে মাছ করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। ওই টাকার মীমাংসার জন্য তিনিসহ এলাকার মাতব্বরেরা একটি সালিস করেছিলেন। সালিসে মহাম্মদ আলী মাত্র ৯০ হাজার টাকা প্রবাসীর স্ত্রীকে লিখিত স্ট্যাম্প মুলে ফেরত দেয়। যা এলাকার গণ্যমান্য সালিসী ব্যক্তিরা অবগত আছেন। মহাম্মদ আলীর অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। এটা মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জানিয়েছেন ধানখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজগর আলী।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীর স্ত্রী জানান, মহাম্মদ আলী তাকে লোভ, প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক ও অত্যাচার করেছেন। প্রাণ বাঁচাতে সবকিছু নীরবে সহ্য করেছেন। তাকে রাজশাহীতে চিকিৎসা দেয়ার নাম করে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টাকালে বাঁধা দিলে সে এক পর্যায়ে তাকে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর পর তার ঘৃণ্য মনোস্কামনা পূর্ণ করেন। এ বিষয়ে তিনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান। তারপরও সে তাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এ প্রতারক, ঘৃণ্য স্বার্থান্বেষীর দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।