মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দিন দিন শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন এসব দোকানে। খোলা আকাশের নিচের এসব অস্থায়ী দোকানগুলোতে ত্রিশ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় দুই হাজার টাকা দরের কাপড় পাওয়া যায়। কম দামে সব বয়সের মানুষের কাপড় পাওয়া যায় বলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলো।
গাংনী বাসস্ট্যান্ডে প্রতিদিন এবং বামন্দি হাটে প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার এবং মেহেরপুর জেলা শহরের কোর্ট বাজার এলাকায় অফিস খোলা দিনগুলোতে বসছে পুরানো কাপড়ের এই দোকানগুলো। এই দোকানগুলোতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কেনা-বেচা। এলাকার নিম্ন ও মধ্য আয়ের বিভিন্ন বয়সের মানুষের শীত নিবারণের একমাত্র ভরসা পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলো।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) মেহেরপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে জেলায় সকাল ৯ টার দিকে তাপমাত্রা ছিল ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আদ্রতা ছিল ৭২ শতাংশ। জেলার বেশ কয়েকটি খোলা বাজারের দোকান ঘুরে দেখা গেছে পুরানো কাপড়ের পাশাপাশি অল্প দামের নতুন কাপড়ও পাওয়া যাচ্ছে। তবে শীতকালীন পুরোনো গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতা সাধারণের চাপ বেশি ।
বামন্দি খোলা বাজারের পুরানো ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ বলেন, প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বামন্দির হাটটি গরু, ছাগল ও বিভিন্ন ফসল বা খাদ্যশস্য কেনা-বেচার জন্য বিখ্যাত। তবে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচের কম দামের নতুন ও পুরোনো কাপড়ের দোকান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর ব্লেজার, জ্যাকেট, মেয়েদের সোয়েটার, কটি ও কোটের চাহিদা কিছুটা বেশি।
গাংনী খোলা বাজারে পুরাতন কাপড় কিনতে আসা ফাতেমা খাতুন নামে এক নারী ক্রেতা বলেন, খোলা বাজারে কম টাকায় বাচ্চাদের সুন্দর সুন্দর গরম কাপড় পাওয়া যায়। বাচ্চার জন্য তিনটা জামা কিনলাম। এই জামা কোন গার্মেন্টস থেকে কিনতে গেলে তিন থেকে চারগুণ বেশি টাকা দিতে হতো। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে খোলা বাজার থেকে কেনা পোশাকগুলো পরিষ্কার করে লন্ড্রী করার পর পোশাকটি খোলা বাজার থেকে কেনা তা বোঝা যায় না। সেজন্য দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খোলা বাজারের গরম কাপড়ের দোকানগুলো।
পুরোনো কাপড় ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, শীতের প্রকোপ কিছুটা হলেও কম তারপরেও প্রতি দিন ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বেচা-কেনা হয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর পুরাতন কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি। তারপরও তুলনামূলক খোলা বাজারে কাপড়ের দাম বেশ কম, তাই নিম্ন ও মধ্য আয়ের ক্রেতাদের ভিড় বেশি থাকে। অল্প বয়সী ছেলে মেয়েদের পোশাকের চাহিদা বর্তমানে বেশি। তবে শীতের প্রকোপ বেশি হলে ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতিও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
একই কথা জানিয়েছেন খোলা বাজারের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম, বাবলু ও ফিরোজ আহমেদ।
গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন শাওন জানান, দীর্ঘদিনের পুরোনো গাংনীর খোলা বাজারের দোকানে কম দামের নতুন ও পুরোনো জামা কাপড়ের জন্য নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের খুব উপকার হয়। এখানে অল্প মূল্যে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের কাপড় পাওয়া যায়।