কয়েকদিন ধরে একটানা তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে মেহেরপুর এলাকার মানুষ। সকালের দিকে কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যেন বেড়েই চলছে। আরো তিন দিন বিরাজমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকাসহ আরো বৃদ্ধি পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন মেহেরপুরের আঞ্চলিক আবহাওয়াবিদ ডঃ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। খুব প্রয়োজন ব্যতীত সড়কগুলোতে মানুষের চলাচল তেমন চোখে পড়ছে না। আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য মতে গত বছর এপ্রিল মাসের ১৯ ও ২০ তারিখে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২. ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১৯ ও ২০ তারিখে ৪২.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
বাইরে অতি তীব্র গরমে শুধু মানুষ নয় পশুপাখিও ছটফট করছে। অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠছে শ্রমজীবী মানুষরা। যেখানে সেখানে ছায়া মানুষ বিশ্রাম নিচ্ছে, একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা পানি, শরবত খাচ্ছে। সব মিলিয়ে অসহনীয় গরমে তীব্র প্রভাব ফেলছে জীবনযাত্রায় এই তাপপ্রবাহ।
তীব্র গরমে দিনমজুর শ্রেণীর মানুষেরা কাজ না করতে পেরে অনেক কষ্টে দিনকাল অতিবাহিত করতে হচ্ছে। তীব্র গরমে বাইরে কাজ করতে না পেরে সংসার চালাতে গিয়ে ধার দেনাও করতে হচ্ছে তাদের।
কেবলমাত্র শিশু ও বৃদ্ধদের কাছে গরম এখনটা নয়, সব বয়সের নারী পুরুষের কাছে তীব্র গরম অসহনীয় অবস্থায়। আবার ঘরের ভেতরেও মিলছে না স্বস্তি, গরমের কারণে সবাই ঘামছে। একটু স্বস্তির আশায় কেউবা গাছের নীচে ছায়ায় আবার কাউকে স্যালো মেশিনের পানিতেও ভিজতে দেখা গেছে। পানিশূন্যতায় অনেকেই অসুস্থ বোধ করছেন।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানিয়েছে, গরমের কারণে গত কয়েকদিনে সব থেকে বেশি মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, খিচুনিসহ নানান রোগের প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে এ অবস্থায় সকলকে ছায়াযুক্ত সতর্ক অবস্থানে থেকে তরল খাবারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
মেহেরপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মেহেরপুরের কাছাকাছি তাপমাত্রা গেল ৫ দিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আজ রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ছয়টায় ৪২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। অতি তীব্র তাপ প্রবাহে মেহেরপুর এলাকার মানুষের জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।