মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া ডাক্তারপাড়ায় মানুষ চলাচলের শত বছরের একমাত্র রাস্তা দখল করে বালু রাখায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ করে সমস্যার সমাধান পাননি বলে অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী পরিবার। মালিকানা জমির দাবী করে রাস্তা ওপর বালু রাখায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ওপর থেকে দ্রুত বালু অপসারণ করে গৃহবন্দী পরিবারদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করার দাবীতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
জানাগেছে, চেংগাড়া ডাক্তারপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তার বাড়ির সামনের শত বছরের মানুষ চলাচলের একমাত্র রাস্তা দখল করে তামাক ঘর নির্মাণ করছিলেন। এবিষয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাংনী থানায় আদেশ জারি করেন স্থানীয় আইন শৃংখলা বজায় রাখতে। গাংনী থানা পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেনের তামাক ঘর নির্মাণ কাজ স্থগীত করেন এবং বালু অপসারণ করে স্থানীয়দের যাতায়াত নিশ্চিত করতে বলেন। কিন্তু প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও বালু অপসারণ করেনি তোফাজ্জেল হোসেন। বালু রাখার পর থেকেই আবদ্ধ হয়ে পড়ে অর্ধশত পরিবার। বন্ধ হয়ে যায় শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের চলাচল। পরে গাংনী উপজেলা প্রশাসনকে কয়েকবার অবহিত করেন স্থানীয়রা। তবুও কোন স্থায়ী সুরাহা না হওয়ায় রাস্তার দাবীতে রবিবার দুপুরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক, ছহিরুদ্দীন, রফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল বারিসহ উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, এ রাস্তাটি প্রায় শত বছর ধরে পূর্বপুরুষগনসহ স্থানীয়রা একমাত্র রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছি। প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটিতে সরকারি টাকায় কয়েকবার মাটি ভরাটের কাজ করে স্থানীয় ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদ। হঠাৎ রাস্তাটি বন্ধ করে আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছে তোফাজ্জেল হোসেন। এ নিয়ে কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। যে কোন ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের নিকট দ্রুত রাস্তাটি অবমুক্ত করার দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের।
তবে তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে পারুলা খাতুন বলেন, জমিটি আমাদের নিজস্ব মালিকানা তাই বালু রাখা হয়েছে। আমাদের নামে কাগজপত্র রয়েছে। তোফাজ্জেল হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বয়েকদিন পর বালু অপসারণ করে নিব। তবে জমি আমার নামে খতিয়ান ভুক্ত হয়েছে। খতিয়ানে ডহর লিখা থাকলেও সেটা আমার নিজস্ব জমি।
স্থানীয় ইউনিয়ন ভুমি অফিস (তহশিলদার) জমিটি ডহর উল্লেখ করে রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রত্যয়ন প্রদান করেন ভুক্তভোগীদের অনুকুলে। জনগনের রাস্তা হিসেবে সরকারি অর্থে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে এবং দীর্ঘদিন রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মর্মে প্রত্যয়ন দেন ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, এবিষয়ে ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হলেও জমিটি মালিকানা খতিয়ান ভুক্ত তাই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, আমি বিভিন্ন মহল থেকে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।