মেহেরপুরের গাংনী থানাধীন কুঞ্জনগর গ্রামের হুদাপাড়ায় ভোতা ও ভারী বস্তুর আঘাতে সাবিনা খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। সাবিনা খাতুন উপজেলার কুমারীডাঙ্গা গ্রামের খালপাড়ার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে।
অন্যদিকে, দুপুরে কুঞ্জনগর হুদাপাড়া গ্রামে আনসার মালিথার বাঁশবাগান থেকে স্বামী বিদ্যুৎ হোসেন (৩৫) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিদ্যুৎ উপজেলার কুঞ্জনগর হুদাপাড়া গ্রামের মৃত ওলিমুদ্দিনের ছেলে।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সাবিনা খাতুনের সহোদর ভাই মাফুল হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জেরে গত এক সপ্তাহ আগে সাবিনা খাতুন মায়ের বাড়িতে চলে যায়। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে আবারও স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসলে বিদ্যুৎ, তার মা আরজুবানু ও আত্মীয়-স্বজন মিলে সাবিনা খাতুন এর সাথে অশালীন আচরণ ও গালিগালাজ শুরু করে। সংবাদ পেয়ে, সন্ধ্যা পর তিনিসহ আত্মীয় মওদুদ আহমেদ জনি, রবিউল ইসলাম, ও খোকন আলী এসে সাবিনা খাতুনকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানায়। এ সময় বিদ্যুৎ রাগান্বিত হয়ে মাফুলসহ তার আত্মীয় -স্বজনকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বুধবার ভোর বেলায় তারা সাবিনা খাতুনের নিহতের সংবাদ পেয়ে ছুটে আসে কুঞ্জনগর হুদাপাড়া গ্রামে।
কুঞ্জনগর হুদাপাড়া গ্রামের ফাতেমা খাতুন জানান, মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে বিদ্যুতের বাড়িতে হৈচৈ দেখে তিনিও এসেছিলেন তাদের বাড়িতে। পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি সাবিনা খাতুনকে অনুরোধ করে ভাত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে বিদ্যুতের মা আরজুবানুর হইচই শুনে এলাকাবাসী আবারো ছুটে গিয়ে সাবিনা খাতুনের মাথার ডানদিকে ভারী কোন বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে মরে পড়ে থাকতে দেখেন।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানান, বুধবার (২৬ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার কুঞ্জনগর হুদাপাড়া গ্রামে এক গৃহবধূ খুনের সংবাদ শুনে সঙ্গীও ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় স্বামী বিদ্যুৎ তার স্ত্রীকে খুন করে পালিয়েছে। পরে দুপুরের দিকে বিদ্যুৎ হোসেনের বাড়ির প্রায় ৫শ’ গজ দূরে স্থানীয় আনসার মালিথার বাঁশবাগান থেকে বিদ্যুতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাবিনা খাতুন ও বিদ্যুৎ হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
মেহেরপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) অপু সরোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।