মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার লক্ষ্মীনারায়নপুর ধলা গ্রামের তামাক ব্যবসায়ী এনামুল হক ওরফে নইলো (৪০) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমানসহ আট জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হচ্ছে- গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও লক্ষ্মীনারায়নপুর ধলা গ্রামের আতিয়ার রহমান, একই গ্রামের ছামিদুল ইসলাম, সাহার আলী, টিপু সুলতান, আব্দুল খালেক, আক্তারুজ্জামান, আব্দুল মান্নান ও জিল্লুর রহমান।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞ আদালত এ মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। বিজ্ঞ আদালত আসামিদেরকে দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। রায় ঘোষণাকালে আট জন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিল। আদালতের নির্দেশে তাদেরকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার লক্ষ্মীনারায়নপুর ধলা গ্রামের সাবেক মেম্বর ও কৃষক লীগ নেতা আতিয়ার রহমান এবং বর্তমান মেম্বর আজমাইন হোসেন টুটুল পক্ষের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী নওপাড়া গ্রামের ঈদগাহের পাশে আজমাইন হোসেন টুটুলের ভাই এনামুল হক নইলোকে (৪০) কুপিয়ে নৃংশসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামি করে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই আজমাইন হোসেন টুটুল। গাংনী থানা পুলিশ তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত আসামিদের নামে চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে।
মামলায় পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্য জানান, এটা একটা লমহর্ষ ঘটনা। মেহেরপুরের জন্য এটা একটা চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য দিয়ে মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। ন্যায় বিচারে আদালত আট জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। এ ধরনের রায় একটা মাইল ফলক হয়ে থাকবে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।
আসামি পক্ষে অ্যাড. একেএম শফিকুল আলম জানান, আমরা এ রায়ে অসন্তুষ্ট এবং ক্ষুব্ধ। আমরা সঠিক বিচার পাইনি। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করব।