মেহেরপুরের গাংনীতে জমির গম ক্ষেত কাটাকে কেন্দ্র করে তোফাজ্জেল হোসেন ও আব্বাস আলী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ ১১ জন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার ধানখোলা গ্রামের মাঠপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আব্বাস আলী গ্রুপের আহতরা হলেন উপজেলার সানঘাট গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে সাবান (৪৫) ও সহোদর আসাদুল (৩০), এবং ধানখোলা গ্রামের মাঠপাড়ার মৃত ইসলাম মণ্ডলের ছেলে জিয়ারুল (৩০), মৃত হেদায়েতুল্লাহর ছেলে ফরমান আলী (৮০) এবং ফরমান আলীর ছেলে ফাকের আলি(২৭)।
অপরদিকে, মৃত এখলাস আলীর ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন গ্রুপের আহতরা হলেন বাদলের ছেলে সেন্টু (৩০), মৃত এখলাছ মণ্ডলের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৬০), রেজাউল ইসলামের ছেলে মিনারুল ইসলাম (৩০), ইয়াজুল ইসলামের ছেলে জিনারুল ইসলাম (৩৮), জিনারুল স্ত্রী রাহিমা খাতুন (৩৫), ও সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সালেহা(৫৫)।
স্থানীয়রা জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে আব্বাস গ্রুপের লোকজনের গম ক্ষেত কেটে তোফাজ্জেল গ্রুপের লোকজন সকালে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিলে প্রথমে বাকবিতন্ডা ও পরবর্তীতে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রের হামলায় আব্বাস পক্ষের ৫ জন ও তোফাজ্জল গ্রুপের ৬ জন আহত হয়েছেন। উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে তোফাজ্জেল গ্রুপের লোকজন আব্বাস গ্রুপের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্র (ফলা) ব্যবহার করে হামলা চালায়। হামলায় আব্বাস গ্রুপের আসাদুল হক, সাবান আলী ও জিয়ারুল ইসলাম মারাত্মক জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। আহত আসাদুল হক, সাবান আলী ও জিয়ারুল ইসলামের
অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। মৃত ইসলামের ছেলে আব্বাস আলী জানান, প্রতিপক্ষ তোফাজ্জেল হোসেন, মামলায় পরাজিত হয়েও তিনি আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পেশী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জোরপূর্বক একাধিকবার ফসল কেটে নিয়ে গেছে। আজও তার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। তাছাড়া জমি-জমা ও ফসল কাটা বিষয়ে ৫ টি মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তোফাজ্জল হোসেনের লোকজন আমাদের গম ক্ষেত কেটে আজ শুক্রবার ভোর বেলাতে তাদের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বাধা দিলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা তার লাঠিয়াল বাহিনী আমার লোকজনকে দেশীয় অস্ত্রের (ফলা) আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে। বর্তমানে আহত ওই তিনজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
প্রতিপক্ষ তোফাজ্জল হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের জমিতে আমরাই গমক্ষেত বুনেছি এবং আমরাই গম ক্ষেত কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। আব্বাস আলী বহিরাগত ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে এসে আমার বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাধা দিলে তাদের নিজেদের লোকজনের আঘাতে নিজেরাই জখম হয়েছে।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, ধানখোলা গ্রামে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়েছি, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।