মেহেরপুরের গাংনীতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়া ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার সাহারবাটি চারচারা বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
সংবাদ পেয়ে সংঘর্ষ এড়াতে গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার হাবিবুর রহমানসহ থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে
পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জানান, আসন্ন সাহারবাটি ইউপি নির্বাচনে রাকিবুল ইসলাম টুটুল চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এমন ঘোষণা দিয়েছেন। তারপর থেকে প্রভাব বিস্তার করার জন্য বিভিন্ন সময়ে টুটুল ও তার সহযোগীরা এলাকার শান্ত প্রিয় মানুষকেকে মারধর ও হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে ইসলাম নামের এক ব্যক্তি টুটুলের নামে জিডি ও মামলা করেছে। উক্ত মামলা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য কয়েকদিন আগে ইসলামকে কোর্টের বারান্দায় হুমকি ধমকি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে টুটুল ও তার লোকজন অতর্কিত হামলা করে সুজন নামের একটি ছেলেকে চায়ের দোকানে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম ও অজ্ঞান করে ফেলে। সুজন বর্তমানে গাংনী উপজেলা কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আজ সকালে ৮ টার দিকে চারচারা বাজার এলাকায় সংঘবদ্ধ দলবল নিয়ে এসে টুটুল আবারো লোকজনকে তাড়াহুড়া ও মাবিয়া মহলদারের ছেলে বদরুদ্দোজাসহ ২/৩ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। সেই সাথে টুটুলের লোকজন ৪/৫ টি বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তিনি আরো বলেন, তিনি যেহেতু বর্তমান চেয়ারম্যান এলাকায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না। তাছাড়া টুটুলের সাথে তার কোনো বিরোধ নেই। তিনি টুটুলকে প্রতিপক্ষ মনে করেন না। কারণ তিনি নৌকার প্রার্থী হিসেবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে টুটুল যদি নৌকার প্রতীক নিয়ে আসতে পারে তিনি টুটুলের পক্ষেই নির্বাচন করবেন বলে অভিমত জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, রাকিবুল ইসলাম টুটুল এ অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সাহারবাটি ইউপি’র বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক আমার লোকজনকে ইতোপূর্বে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাকে ইতিপূর্বেই হত্যার হুমকি দিয়েছিল, যে বিষয়ে একটি মামলাও রয়েছে। আজ সকাল ৭টা থেকে আমার উপর হামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ফারুক চেয়ারম্যানের লোকজন। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মৃত আজাহার বিশ্বাসের ছেলে টোকন, মাবিয়ার ছেলে সামছুজ্জোহা, বানারের ছেলে নুরু, ওহাবের ছেলে রবিউল ইসলাম ও রেহেনের ছেলে আইএসের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোকজন নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা ৪টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। আসন্ন নির্বাচনে আমাকে মাঠ থেকে সরাতেই এ হত্যার এ নীল নকশা করছে বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, সাহারবাটি গ্রামে ইসলাম গ্রুপ ও টুটুল গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল ও আজ এই ঘটনা ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা শোনার পরপরই পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।