মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কলোনীপাড়ার মাঠে আঃ কুদ্দুস (৫৫) নামের এক কৃষকের এক বিঘা জমির লাউ ক্ষেত উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগী কৃষক। আব্দুল কুদ্দুস বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কলোনী পাড়ার মৃত আঃ আজিত মন্ডলের ছেলে।
সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্বাস আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী জমির মালিক কৃষক আঃ কুদ্দুস জানান, তিনি তার এক বিঘা জমিতে ২২০ খানা লাউ গাছের চাষ করেছেন। এ লাউ ক্ষেতের চাষ করতে গিয়ে নিজের গচ্ছিত টাকাসহ এনজিও এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট প্রায় এক লক্ষ টাকা ঋণগ্রস্থ হয়েছেন। ভেবেছিলেন ক্ষেতের ফসল বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা আসবে। সেখান থেকে ধার দেনার টাকা পরিশোধ করে লাভবান হবেন তিনি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই তার সে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ার) সন্ধ্যার কিছুটা আগে তিনি লাউ ক্ষেতে কাজ করে বাড়ি এসেছেন। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৮ টার দিকে লাউ ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে প্রত্যেকটি লাউয়ের গাছ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান। এ অবস্থায় তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েন। এখন কি করবেন তিনি, উপায়ান্তর না দেখে বিষয়টি তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাহারবাটি ইউপি সদস্য আব্বাস আলীকে জানান।
কুমড়া ও লাউ ক্ষেত কর্তনের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ফকির মোহাম্মদ ও আব্দুল ওহাবসহ এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানীয় লোকজন ওই জমিতে গিয়ে হাজির হন।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, প্রায় মাস খানেক আগে রাতে স্থানীয় কিছু যুবক ছেলেদের সাথে উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী কৃষকের সাথে বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটেছিল। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গাংনী থানা পুলিশ বিষয়টি অবগত রয়েছে। ওই ঘটনার জেরে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয়রা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ক্ষতিপূরণ আদায় ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, মানুষের সাথে মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে সেটা ফসলের ওপরে গিয়ে কেন প্রভাব পড়বে, এটা কখনো কাম্য নয়। যারা এ ধরনের ঘৃণ্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে ক্ষতিপূরণ আদায়সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ ঘটনায় গাংনী থানায় একটি লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে।