মেহেরপুরের গাংনীতে থানার অদূরে ধানখোলা রোডে বিল্লাল নার্সারির সামনে আবারো দুর্ধর্ষ গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে ৭-৮ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ ডাকাত দল পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে পথচারীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে গাংনী থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়। ঘটনার রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে পাঁচজন সন্দেহভাজন ডাকাত দলের সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তিরা হলো- গাংনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মাঠপাড়ার কালাম আলীর ছেলে কামরুজ্জামান শিহাব ওরফে কাবীরুল (২৮), মাসুদ রানার ছেলে শাকিব আলী (২৫), মোকাদ্দেস ওরফে মোকা এর ছেলে মুরসালিন (৩৩) ও মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আজাদ আলীর ছেলে মিকাইল (১৯) ও একই গ্রামের মীরপাড়ার ওসমান আলী মীর এর ছেলে জাহিদ হোসেন (২১)।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী মহিষাখোলা গ্রামের জামাত আলীর ছেলে ইয়াসির আরাফাত জানান, তারা কয়েকজন মিলে পাখি ভ্যান যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গাংনী- ধানখোলা সড়কে বিল্লাল নার্সারির সামনে পৌঁছালে, হাফ প্যান্ট পরা কয়েকজন অস্ত্রধারী ডাকাত দলের সদস্য ককটেল ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অস্ত্রের মুখে পথচারীদের জিম্মি করে ফেলে। পথচারীদেরকে মারধর করে কাছে থাকা টাকা পয়সাগুলো ছিনিয়ে নেয়। প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী চলে তাদের এই তান্ডব। প্রায় ১৫ থেকে ২০ জনের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার সময় অস্ত্রধারী ডাকাত দলের সদস্যরা ইয়াসির আরাফাতের কাছ থেকে নগদ ৭ হাজার টাকা, একই গ্রামের আব্দুল হালিমের কাছ থেকে ৬০০ টাকা, শাহজামালের ৫ হাজার টাকা, রেজিয়া খাতুন এর কাছ থেকে ৭০০ টাকা, মিন্টুর কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ধানখোলা গ্রামের মহব্বত আলীর কাজ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, মিন্টুর কাছ থেকে ৯ হাজার ৭০০ টাকা এবং আড়পাড়া গ্রামের কুরসিয়া খাতুনের কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা লুট করে নেয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন পথচারীর কাছ থেকে ডাকাতরা নগদ টাকা লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরাইল জানান, গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে গাংনী- ধানখোলা আঞ্চলিক সড়কে ককটেল ফাটিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরে পুলিশের জরুরি কেন্দ্র থেকে সহযোগিতা নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে সন্দেহভাজন পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের নামে মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য: ইতোপূর্বে বুধবার (২৫ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বিল্লাল নার্সারির মোড় নামক একই স্থানে এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। ৪ মে ২০২৫ তারিখে পাকুড়িয়া-খড়মপুর সড়কে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। এ ছাড়াও চলতি বছরের ১ লা জুলাই তারিখে রাত ১০টার দিকে উপজেলায় পোড়াপাড়া-জুগিন্দা আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। উপরোক্ত সবকয়টি ঘটনারই তথ্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করতে পারে নাই পুলিশ। মাঝে মাঝে এমন ডাকাতির ঘটনায় সড়কে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে এবং এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।