মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফলকর নিলামকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল পৌনে ১০ টার দিকে এ বিদ্যালয় চত্বরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে করমদি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম আহত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিলাম কার্যক্রম আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ৯৯ টি আম , ৪ টি কাঁঠাল ও ১৮ টি তাল গাছের ফলকর নিলামে বিক্রির যাবতীয় কার্যক্রমের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সোমবার সকাল ৯ টার দিকে বিদ্যালয় চত্বরে জনসম্মুখে খোলা ডাকের মাধ্যমে ফলকর নিলামের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যদের কোরাম পুরন নেই অভিযোগ তুলে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে স্থানীয় আলমগীর, রাকিবুল ও রাজুসহ কয়েকজন যুবক। এ সময় মতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় জনগণ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে রাকিবুল ইসলাম জখম হয়। গাংনী থানা পুলিশের এএসআই বিপ্লব হোসেন পরিস্থিতি সামাল দেন। স্থানীয়রা রাকিবুল ইসলামকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই গাংনী থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ জানান, পূর্বনির্ধারিত দিনক্ষণ অনুযায়ী সোমবার সকাল ৯ টার দিকে বিদ্যালয়ের ফলকর নিলামের প্রক্রিয়া চলছিল। এ সময় স্থানীয় যুবক আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন যুবক শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে। পরে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতণ্ডা ও এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে রাকিবুল ইসলাম নামের এক যুবক আহত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফলকর নিলাম কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোশারফ হোসেন জানান, স্থানীয় আলমগীর রাকিবুল রাজু রিপনসহ কয়েকজন যুবক গত বছরে এ ফলকর মাত্র দশ হাজার টাকায় নিলামে নিয়েছিল। এ বছর খোলা ডাকের মাধ্যমে নিলামের ব্যবস্থা করায় তারা কিছুটা হলেও ক্ষিপ্ত। এ নিলাম ব্যবস্থাকে বানচালের উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন জানান, করমদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফলকর নিলামে বিক্রির কার্যক্রম চলাকালে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সাথে স্থানীয় জনগণের বাক-বিতণ্ডার সংবাদ পেয়ে নিলাম কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে পুনরায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিয়ম অনুযায়ী জানিয়ে দেওয়া হবে।
গাংনী থানার এএসআই বিপ্লব হোসেন জানান, তিনি ওসি স্যারের নির্দেশে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গ্রামবাসির উপস্থিতিতে সুষ্ঠ পরিবেশে বাগানের ফলকরের নিলাম প্রক্রিয়া চলছিল। এসময় স্থানীয় কতিপয় যুবক ছেলেরা উপস্থিত হয়ে শালীনতা বজায় না রেখে কথাবার্তা বললে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতণ্ডা ও এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
গাংনী থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে উভয় পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।