মেহেরপুরের গাংনীর চারটি ইট ভাটায় শ্রমিকদের জিম্মি করে মারধর করেছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা পরিশোধ না করা পর্যন্ত ইটভাটাগুলো বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে তারা। সোমবার গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা ইটভাটায় হানা দিয়ে শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও তাদের সাথে মালিকপক্ষকে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নাম্বার দিয়ে গেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন ইটভাটায় গিয়ে জানা গেছে, গভীর রাতে যখন শ্রমিকরা ইট পোড়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন সে সময় ৪ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী প্রথমে থানা রোডে পান্না ব্রিকসকে হানা দেয়। এসময় ইট পোড়ানোর শ্রমিকদের জিম্মি করে মারধর করে। পর্যায় ক্রমে পার্শ্ববর্তী পায়রা ব্রিকস, টু স্টার ব্রিকস ও এএসবি ব্রিকসে হানা দিয়ে তাণ্ডব চালায়।
এএসবি ব্রিকস স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, সন্ত্রাসীরা হানা দিয়ে শ্রমিকদের জিম্মি করে মারধর করে। ফরিদপুর থেকে খড়ি নিয়ে আসা ট্রাকের সামনের গ্লাস ভেঙে দেয় এবং ড্রাইভারের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। সন্ত্রাসীরা চারটি ইটভাটাতেই কাগজে লিখে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে গেছে। চাঁদা পরিশোধ না করা পর্যন্ত ইটভাটা বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। বিষয়টি নিয়ে ইটভাটাগুলোতে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আজ সকাল থেকেই ইটভাটার কার্যক্রম চালু থাকলেও রাতে শ্রমিকরা আর কাজ করতে চাইছে না।
আহতরা শ্রমিকরা হলো – টু-স্টার ইটভাটার সাজেদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, হাকিম শেখ ও ফিরোজ আলী।
পায়রা ইটভাটার মিনারুল ইসলাম, নাজমুল হক, শমসের আলী কালু ও রন্টু।
পান্না ইটভাটার পলান।
এ এস বি ভাটার লিটন আলী, আব্দুল হান্নান ও তরিকুল ইসলাম।
ইট ভাটা মালিক হাজী মহাসিন আলী জানান, প্রায় তিন/চার বছর হতে চলল এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ ছিল। আবারো সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তাছাড়া গত কয়েকদিন আগে ধানখোলা ও হাড়িয়াদহ রোড এলাকার পাশের পৌরসভার লাইটিং ব্যবস্থাটিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকার প্রতিবছর ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে বড় অংকের ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট পেয়ে থাকে। তাছাড়া ইটের সাথে সম্পর্কিত সরকারের উন্নয়ন কাজ, অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাজার হাজার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান জড়িত। তারপরও বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন বিভিন্ন অজুহাতে লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহনশীল হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
বিষয়টি গোচরে আনলে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনাগুলোর জিডি দায়ের করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।