মেহেরপুরের গাংনীতে ট্রাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কায় ঈদগাহের গেটভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের আঘাতে রিদয় (৩২) নামের এক দিনমজুর নিহত হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে উপজেলার রামনগর- চরগোয়ালগ্রাম গ্রামের সড়কের রামনগর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিদয় উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের চরগোয়ালগ্রামের মন্ডল পাড়ার দিনমজুর শাহাদত আলীর ছেলে।
ঘটনার পর পরই মেহেরপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল করিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহাসহ গাংনী থানা পুলিশ, র্যাব ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চরগোয়ালগ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম জানান, ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে চরগোয়ালগ্রামের ঈদগাহের দৃষ্টিনন্দন গেটটি তৈরি করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রামনগরের একজন ট্রাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেটে ধাক্কা দিলে সামনের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনার পরপরই ট্রাক্টর চালক সটকে পড়ে। ঘটনা জানাজানি হলে চরগোয়ালগ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি রামনগরে গিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেওয়া হয়। ওই সময় চরগোয়াল গ্রামের মোটরসাইকেল মিস্ত্রী জান্নাত আলী তাদের ওপর মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক দিয়ে অতর্কিত হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। হামলায় রিদয় নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়।
চরগোয়াল গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সজল জানান, ঘটনার সময় গ্রামের বেশ কয়েকজন লোক রামনগর গ্রামের মোড়ে জান্নাত আলীর মোটরসাইকেলের দোকানের কাছে পুলিশ আসার অপেক্ষা করছিলাম। ওই সময় চরগোয়াল গ্রামের কিরামত মন্ডলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম মন্টু ও রামনগর গ্রামের কয়েকজনের সাথে বাকবিতোন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে জান্নাতসহ রামনগর গ্রামের লোকজন অতর্কিত হামলা করে তাদেরকে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের আঘাতে রিদয় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রামনগর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, চরগোয়ালগ্রামে ঈদগাহের গেট ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে ১০-১৫ জন লোক রামনগরে এসে খোকা খোয়ালের ছেলে মিরার কাছ থেকে ট্রাক্টরের চাবি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ অপেক্ষায় থাকাকালীন সময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতোণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে শুরু হয় মারামারি। মারামারিতে রিদয় নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। তাকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরতর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মেহেরপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল করিম বিষয়টির নিশ্চিত করে জানান, উপজেলার চরগোয়ালগ্রামে ঈদগাহের গেট ভাঙ্গা ও পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেখানে একজন নিহত ও দোকান ঘরসহ মালামাল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা রয়েছে। আমিসহ স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ, থানা পুলিশ, র্যাব ও যৌথ সেনাবাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশের সদস্যসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। আইনি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি সভাপতি হয়েছে। আশা করছি যারা দুষ্কৃতিকারী ও অপরাধী তাদেরকে অতিসত্বর আটক করা সম্ভব হবে।