মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের চৌগাছা বড় মসজিদপাড়ায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে ব্যবহৃত একটি রাস্তা দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় রোববার (২ নভেম্বর) সকালে চৌগাছা এলাকায় মহল্লাবাসীর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহল্লাবাসীর পক্ষে মো. দোয়াত আলী বলেন, ৪৬ নম্বর মৌজার আর এস খতিয়ান ২৩৩২ সাবেক দাগ নং ৬৯৯২ শ্রেণী বাড়ি খাস খতিয়ানভুক্ত দশমিক ৩৭ শতক জমি। জমিতে মৃত ওয়াজ আলী নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন আগে বসবস করতেন।
পরবর্তীতে তিনি ওই জমির মধ্যে থেকে দশমিক ২৫ শতক জমি বন্দোবস্ত নিয়ে মৃত আব্দুল মান্নান, দোয়াতুল ইসলাম ও শামসুল আলমের নিকট বিক্রি করেন। অবশিষ্ট দশমিক ১২ শতক জমি খাস খতিয়ানে রয়ে যায়। এই জমির কিছু অংশ দীর্ঘ ৫০/৬০ বছর ধরে স্থানীয়রা রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমানে ওই রাস্তার দখল নিয়ে শামসুল আলমের ছেলে ও সেনা সদস্য গোলাম মর্তুজা বুলবুল জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি সেনা সদস্য পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং ভাড়াটে লোক নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে প্রায় ২০-২৫টি পরিবার চলাচলে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, জমি নিয়ে পূর্বে শামসুল আলম বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৭ জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন (নং-৩২৪/২০২৩) দায়ের করেন। তদন্ত শেষে আদালত মামলা নথিজাত করে রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি দেন। পরবর্তীতে পুনরায় পিটিশন করলে আদালত স্থানীয়ভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে পুনরায় দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়, যাতে দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত এই রাস্তা রক্ষা পায় এবং স্থানীয় পরিবারগুলো চলাচলের অধিকার ফিরে পায়।
অন্যদিকে, শামসুল আলমের ছেলে ও সেনা সদস্য গোলাম মর্তুজা বুলবুল জানান, প্রকৃতপক্ষে দলিল মুলে তিনি ওই নালিসী জমির মালিক। জমিটি প্রায় ১১৯ ফিট লম্বা এবং প্রায় ১৬ ফিট চওড়া। ইতোপূর্বে পৌরসভার সহযোগিতায় ওই জমিতে ৬ ফিট রাস্তা রেখে তারকাটা দিয়ে ঘিরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদান করলে জানতে পারি, স্থানীয়রা রাস্তার সীমানা তারকাটা বেড়া তুলে নিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, তার জমির পাশে প্রতিবেশীদের জমি রয়েছে। তারা যদি রাস্তা হিসেবে ব্যবহারের জন্য ৫ ফিট জমি দেয়, তাহলে তিনিও ৫ ফিট রাস্তা দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে পরবর্তীতে ছাদ ঢালাইয়ের সময় ওই ছেড়ে দেয়া ৫ ফিট রাস্তা ওপরে ধরে নিতে চান তিনি। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রাখবেন বলেও জানান।