মেহেরপুরের গাংনী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান লালু মাস্টারের বিরুদ্ধে আনা ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু কার্যক্রম ব্যাহত করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান লালু মাস্টার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এবং রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সাজানো এবং মিথ্যা। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে একটি মহল আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ যেসব অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অসত্য। বরং আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিবেশ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছি।
তিনি আরও বলেন অফিস সহায়ক হাসানুজ্জামান চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই নানা সময়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আসছে। বিদ্যালয়ের নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। যার ফলে সাংবাদিকদেরকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করিয়েছেন যা আদৌও সত্য নয়। আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) হাসানুজ্জামান বিদ্যালয়ে না এসে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গাংনী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান দায়িত্বশীলভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা বলেন আমরা কখনও তার কাছে টাকা দিতে বাধ্য হইনি। বরং বিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে তিনি সবসময় সচেষ্ট থেকেছেন।
স্থানীয় অভিভাবক ও সুধীজনরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান লালু মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা উন্নয়নে কাজ করছেন। তার উদ্যোগে বিদ্যালয়ের ফলাফল ও শৃঙ্খলায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা আরও জানান, অভিযোগ থাকলে তা যথাযথ প্রমাণসহ লিখিত আকারে শিক্ষা বিভাগে দাখিল করা উচিত। গণমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে অফিস সহায়ক হাসানুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগদানের সময় বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কিছু টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারিক অভাব অনটনের জন্য টাকা আমি দিতে পারি নাই। পারিবারিক অভাব অনটনের জন্য প্রধান শিক্ষক আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতাও করেছেন। ওই সময় বেতন না হওয়ায় বিদ্যালয়ে না এসে বাইরে বাইরে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে অনেক কিছুই ঘটে গেছে। বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। তবে অল্প দিনে আমার একটি বিল আসার কথা রয়েছে। ভেবেছিলাম ওই টাকা থেকে বাকি টাকাটা দিয়ে দেব। শিক্ষক নাজমুল স্যারকে আমি বিষয়টি জানিয়েছি। তবে বিলটি আসতে দেরি হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক স্যার আমাকে বকাবকি শুরু করে এবং টাকাটা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং গত বৃহস্পতিবার আমাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে মৌলিক ভাবে জানিয়েছি। আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়ে আসা হয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আমার জীবনের নিরাপত্তার অভাব ছিল তাই আমি বিদ্যালয় যায়নি। এ বিষয়ে জিডি করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান ইউএনও স্যারকে মোবাইলে জানানো হয়েছে। তিনি কি আপনাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান নিষেধ করেননি। আজকে বিদ্যালয়ে না এসে তিনি উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন বলেও জানান।