মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দি ইউনিয়নের মুন্দা গ্রাম থেকে বাদশা (২৫) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে নিজ বাড়ির শয়ন কক্ষ থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়। বাদশা মুন্দা গ্রামের রিফুজি পাড়ার বজলুল হকের ছেলে।
গাংনী থানা ওসি তদন্ত মনোজিৎ কুমার নন্দী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত বাদশার চাচা বিল্লাল হোসেন জানান, বাদশা তাঁর পিতার একমাত্র সন্তান। গত দুই বছর আগে সে সৌদি আরব থেকে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি ফিরে আসার এক বছর পর সে আবারো সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য মনস্থির করে। সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের চেংগাড়া গ্রামের মৃত নঈমদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলামের হাতে ৯ লক্ষ টাকা জমা দেয়। কিন্তু দশ মাস পার হয়ে গেলেও বাদশার বিদেশ যাওয়া ঘটেনি। পরিবারের চাপের একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম গত এক মাস আগে চেংগাড়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে শাহাবুদ্দিনের মাধ্যমে বাদশাকে বিদেশে পাঠানোর কথাবার্তা চূড়ান্ত করে।
বিদেশ পাঠানোর বিষয়ে বাদশাকে প্রায় ৭ বার ঢাকাতে নিয়ে যাওয়ার পরেও তার বিদেশ যাওয়া ঘটেনি। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাদশা শাহাবুদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি নির্দিষ্ট কোন তারিখ জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাদশা আবারো শাহাবুদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে কথাবার্তা শুরু করে। শাহাবুদ্দিন আবারো নির্ধারিত কোন তারিখ জানাতে না পারায় মোবাইল ফোন রেখে নিজ ঘরের আড়ার সাথে উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে বাদশা।
চেংগাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম জানান, বাদশাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর প্রায় ১১ মাস আগে বাদশার পিতার কাছ থেকে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জমা নেন। কিন্তু বাদশাকে সিঙ্গাপুরে পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় বাদশার পিতাকে ডেকে একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে শাহাবুদ্দিনকে এস এন বি ট্রাভেলস কোম্পানির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর জন্য ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়। তারপর থেকে নুরুল ইসলামের সাথে বাদশা ও তার পরিবারের কোন সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।
অপরদিকে, শাহাবুদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, প্রকৃতপক্ষে বাদশাহ হচ্ছে নুরুল ইসলামের ক্লাইন্ট। এ বিষয়ে আমার চাইতে নুরুল ইসলাম ভালো বলতে পারবে।
গাংনী থানা ওসি তদন্ত মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, উপজেলার মুন্দা গ্রামে গলায় ফাঁস নিয়ে এক যুবকের আত্মহত্যার সংবাদ পেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।