মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলা আসামিদের পুনঃ গ্রেফতার ও সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই সুজয় কুমার মল্লিককে ক্লোজ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘেরাও করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে সদর থানা কম্পাউন্ডের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার একটি ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে একই উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বায়েজিদ নামের এক যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বায়েজিদের সহযোগী আলামিন হোসেন।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদি হয়ে গেল ২০২৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ, আলামিন ও বরকত আলী নামের তিন জনের নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। আসামিরা গ্রেফতার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। কয়েক মাস হাজতবাসের পর আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। ঘটনার তদন্তের স্বার্থে পুলিশের এস আই সুজয় কুমার মল্লিক সন্ধ্যায় উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে নেন। তদন্তকালে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই বিষয়টি নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করছেন এমন অভিযোগও ওঠে।
সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সদর থানা ঘেরাও করে। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তার দায়িত্ব থেকে অপসারণ ও ধর্ষণের আসামিদের পুনঃ গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানোর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘেরাও করে কম্পাউন্ডের মধ্যে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মেহেরপুর জেলায় দায়িত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিমসহ পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার জানান, ধর্ষণ মামলায় জমিনে মুক্তি পাওয়া আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদিকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে এমন একটি অভিযোগ সদর থানায় নেয়া হয়। অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে উভয়পক্ষকে সন্ধ্যায় থানায় হাজির হতে বলা হয়। উভয়পক্ষ হাজির হয়ে কথা বার্তার এক পর্যায়ে বাদ বিতান্ডা শুরু হয়। সংবাদ পেয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও এসে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষার্থীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক হয়। পরে দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৪ মার্চ) দিবাগত গভীর রাতে এস আই সুজয় কুমার মল্লিককে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয় এবং রাতেই মামলার আসামিদের পুনঃ গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্তের স্বার্থে আরও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
দাবি মেনে নেয়ার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সদর থানা কম্পাউন্ড ছেড়ে চলে যায়।