মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। একজন দায়িত্বশীল শিক্ষক কর্তৃক দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভিডিও কলে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এলাকায় নিন্দা-ক্ষোভের ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
গত শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইমোতে ছড়িয়ে পড়ে ওই অশ্লীল ভিডিও। এরপরই সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়—চুম্বন ও অশোভন কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী ঠোঁটে চুম্বনের ইঙ্গিত দিলে শিক্ষক রাজু আহমেদ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে সাড়া দেন। ভিডিওটি একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আপলোড হওয়ার পর মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে।
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, “শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ড এই কথাটি আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের এমন চরিত্র জাতির ভবিষ্যতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এমন শিক্ষককে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে চাই না।”

অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাই শেখার জন্য, নিরাপদ পরিবেশের জন্য। আর সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকই যদি এভাবে শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রধান শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই।”
স্থানীয় অভিভাবক মজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, “রাজু মাস্টারের নামে এর আগেও এলাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দুর্নাম রয়েছে। এছাড়া এলাকায় আদম ব্যবসার সঙ্গেও তার নাম জড়িয়েছে। বারবার বিতর্কিত কাজে যুক্ত থেকেও তিনি বহাল তবিয়তে বিদ্যালয়ে আছেন এটা দুঃখজনক।”

এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের ব্যক্তিগত ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে তার পরিবারের পক্ষে সুজন আহমেদ জানান, বিদেশে লোক পাঠানোকে কেন্দ্র করে তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জানান, তার শিক্ষক রাজু আহমেদের সাথে সপ্তম শ্রেণী থেকে সম্পর্ক ছিল এটা ঠিক। তবে রাজু স্যার একজন দুশ্চরিত্রের মানুষ। আমি তার কাছ থেকে সরে আসতে চাইলে তিনি বিভিন্নভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। এর আগেও তিনি কয়েকজন মেয়ের সাথে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাই আমি কোন টাকা পয়সার বিনিময়ে না, তার চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চাই। যাতে আর অন্য কোন মেয়ের সাথে এ ধরনের অপকর্ম করতে না পারে।