গাংনী অফিসঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়ীয়া গ্রামের মাঠে ১২ বিঘা জমির গম ও মসুরী খেত বিনষ্ট করেছে দৃর্বৃত্তরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৮ জন কৃষক। এ সম্পত্তি নিয়ে মেহেরপুর আদালতে একটি মামলা বিচারাধিন। ভুক্তভোগী কৃষকের দাবী, প্রতিপক্ষ মতিয়ার রহমান গং পরিকল্পিতভাবে তাদের এ ফসল বিনষ্ট করেছে। তবে এ দাবী অস্বীকার করে মতিয়ার রহমান গং জানিয়েছেন, বর্তমান যারা ওই জমি দখল করে চাষাবাদ করছেন তারাই নিজেদের ফসল নিজেরাই নষ্ট করে আমাদেরকে এ ফাঁসাতে চাইছেন।
মেহেরপুরের গাংনীতে ৮ জন কৃষকের ১২ বিঘা জমির ফসল তছরুপ করেছে প্রতিপক্ষ। উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়ীয়া গ্রামের বেকি রাস্তার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকগণ ক্ষয়-ক্ষতির বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করবেন বলে জানান।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক হোগলবাড়ীয়া গ্রামের আফিলউদ্দিনের ছেলে ছাদেক আলী জানান, গত পেঁয়াজ মৌসুমে প্রতিপক্ষরা বিষ প্রয়োগ করে পেঁয়াজ বিনষ্ট করেছে এবং চলতি মৌসুমে ৮ জন কৃষকের প্রায় ১০ বিঘা জমির গম ও ২ বিঘা জমির মসুরী বিনষ্ট করে দিয়েছে । প্রতিপক্ষরা জমি জমা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আদালত থেকে কোন রায় না হলেও তারা পেশি শক্তি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে একের পর এক মাঠের ফসল বিনষ্ট করে চলেছে। ইতোপূর্বে প্রতিপক্ষরা পেঁয়াজ মৌসুমে বিষ প্রয়োগ করে পেঁয়াজ বিনষ্ট করেছে। সে বিষয়ে গাংনী থানায় অভিযোগ দিলেও প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বরং প্রতিপক্ষরা উল্টে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। তিনি আরো বলেন আমি একজন গরীব কৃষক জমি বর্গা নিয়ে আবাদ ও দিন মজুরের কাজ করে সংসার নির্বাহ করে আসছি। তাছাড়া ফসল ফলানোর জন্য গ্রাম্য দোকানে সার ও বিষ বাকীতে নেওয়া ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে ফসল ফলানোর ব্যবস্থা করেছি। ফসল ঘরে উঠলে সকলের টাকা পরিশোধ করার পরিকল্পনাও ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটে বিপত্তি ০৫/০১/২০২১ ইং তারিখ মঙ্গলবার দিন বা রাতের কোন এক সময়ে গম ও মসুরী ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করে আবারো ১২ বিঘা জমির ফসল বিনষ্ট করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। একই কথা জানালেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মরহুম রমজান আলীর ছেলে বাদলসহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকগণ।
প্রতিপক্ষরা হলো- হোগলবাড়ীয়া মালিথাপাড়ার দিন মহম্মদের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৪), মৃত জৌলুস আলীর ছেলে নুরাবুল ইসলাম (৩৫), আখের আলীর ছেলে কাবাতুল্লাহ (৪৫), খাইরুল ইসলাম (৫৫), খাইরুল ইসলামের ছেলে ফরিদ আলী (৩৫), ও মাঠপাড়ার দিনমহম্মদের রফিকুল ইসলাম ও মৃত জলিল ঠাকুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৮)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আইজউদ্দিন জানান, ফসলের ক্ষতি করা জঘন্যতম অপরাধ। দফায় দফায় ফসলের যারা ক্ষতিসাধন করছে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই কথা জানালেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ।
প্রতিপক্ষ মতিয়ার রহমান জানান, যারা অভিযোগ করছে তাদের কোন দলিলপত্র নাই। তাছাড়া আদালতে মামলা চলমান তাই তারা নিজেই ফসলের ক্ষতি করে আমার বা আমার আত্মীয়-স্বজনের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। এটা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম শাহাবুদ্দিন জানান, এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করা হবে।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, ফসল বিনষ্টের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।