মেহেরপুরের গাংনী পাইলট (মডেল) স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রাপ্ত টাকা ফেরত দিলেন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন। মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বিজয় ও মুকুল জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে ২০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষের এসএসসি পরীক্ষা-২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ১২টি বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করার জন্য ফরম পূরণ ও ফিশ গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছিল। সরকারি ও শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় মাত্র ৩টি বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ফলে ৯টি বিষয়ে গ্রহণকৃত অতিরিক্ত টাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে ফেরতের লিখিত নির্দেশনা দেয় শিক্ষা বোর্ড। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উক্ত টাকা ফেরত দিলেও গাংনী পাইলট (মডেল) স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন উক্ত টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি শুরু করেন। হয়রানির হাত থেকে রেহাই পেতে আজ মঙ্গলবার (১০ মে) শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় চত্বরে আন্দোলন শুরু করে।
আন্দোলনের মুখে অবশেষে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ২২১জন শিক্ষার্থীকে টাকা ফেরত দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন।
শিক্ষার্থী মুস্তাক আহমেদ ও সুমাইয়া রহমান তাসনীম জানায়, গাংনী পাইলট (মডেল) স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করছে তারা। তাছাড়া শিক্ষা বোর্ড থেকে ফেরত আসা টাকা নেওয়ার জন্য দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতেও টাকা খরচ হয়। একাধিকবার স্কুলে আসা যাওয়ার কারণে যে টাকা পাওয়া যাবে তার চেয়ে বেশি টাকা রাস্তাতে খরচ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে প্রধান শিক্ষক তাদের সাথে অশোভন আচরণ করে থাকেন। সে কারণে এক প্রকার বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা আজ আন্দোলন শুরু করেছে।
প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, কোন শিক্ষার্থী কত টাকা পাবে এ ধরনের কোনো মোবাইল মেসেজ আমাকে দেখাতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। মোবাইল মেসেজ দেখালে টাকা দেওয়া হবে। উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী কেবলমাত্র শীটে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে টাকা ফেরত দিয়েছে তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কেন পাচ্ছে না? এমন প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।
গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর হাবিবুল বাশার জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। টাকা ফেরত না দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুলগুলোতে ফরম পূরণের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত না দিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।