মেহেরপুরের গাংনী বাজারে উঠতে শুরু করেছে আটি লিচু। ক্রেতা সাধারণ বলছে দাম অনেক চড়া। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছে ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি কম থাকায় কাঙ্ক্ষিত মূল্যের কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে লিচু। গাংনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলায় ১২৫ হেক্টর জমি জুড়ে রয়েছে লিচু বাগান। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৯১৫ মেট্রিক টন।
বুধবার (৮ মে) সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গাংনী বাসস্ট্যান্ড, বামন্দি বাজার, সাহারবাটি বাজার, জোড়পুকুরিয়া বাজার, নওপাড়া বাজার, ধানখোলা বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে লিচু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বছরের প্রথম সুমিষ্ট ও রসালো ফল হিসেবে শখ করে বেশি দামেই কিনছেন অনেকে।
গাংনী বাজারে লিচু কিনতে আসেন মাসুদ রানা। তিনি বলেন, আশেপাশের এলাকার আটি লিচু এগুলো। এগুলো প্রতিবছরই প্রথমে ওঠে। এবারও উঠেছে। স্বাদে পুরোপুরি মিষ্টি না হওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। গেল বছর আটির যে লিচু ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই লিচু এবার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-৩০০ টাকায়।
লিচু বিক্রেতা হুমায়ুন আহমেদ বলেন, ‘সারা বছর আমি অন্য ব্যবসা করি। এসময় আম-লিচুর ব্যবসা করি। মূলত আমার ক্রেতারা অধিকাংশ আশেপাশের এলাকার। তবে এবার প্রথম এক হাজার লিচু সকালে এনেছি। বাজারে প্রথম উঠেছে তারপরও চাহিদা কম। বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ৫ শ’ লিচু বিক্রি হয়েছে।
লিচু ব্যবসায়ী চৌগাছা গ্রামের আব্দুস সামাদ জানান, বাজারে লিচুর পর্যাপ্ততা থাকলেও ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতি খুবই কম। ফলে কাঙ্খিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্য লিচু বিক্রি করতে হচ্ছে। একই কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ী মালসাদহ গ্রামের রিপন ও শিপন আলী, রামকৃষ্ণপুর ধলার আলমগীর, সাহারবাটি গ্রামের উজ্জ্বলসহ অনেকে।
বাজারে লিচু কিনতে এসেছেন খোলা বাজারের ব্যবসায়ী হোসেন আলী। তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে দেখছি বাজারে আটি লিচু উঠেছে। এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর ফলন কম হয়েছে এবং দাম একটু বেশি। তবে টক হওয়ার ভয়ে কিনিনি। গতকাল কিছু লিচু কিনেছি। তবে প্রথম দিকের লিচু হিসেবে স্বাদ তেমন একটা খারাপ না। ছেলে বায়না ধরেছে তাই আজও কিনতে এসেছি।’
গাংনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, বাজারে বর্তমানে যে লিচুগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা আটি লিচু। এগুলো আগাম হয়। এগুলো হালকা রঙিন হলেই মানুষ বিক্রি করে দেয়। এটার টেস্ট তেমন সুমিষ্ট না, বীজও বড়। তবে আগামী ১৫-২০ মে তারিখের মধ্যে সুমিষ্ট ও রসালো লিচু বাজারে পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা।