রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা
বিজিবি’র মাদক মামলার দুই পলাতক আসামি জেল হাজতে  গাংনীতে মাদকসেবীর এক বছরের জেল  গাংনীতে মরা গরু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে রাখার দায়ে কসাইকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা  জাবিতে মেহেরপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি মিরাজ সম্পাদক রুবেল গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক জীবন আকবর গ্রেফতার  গাংনীতে পিএসকেএস এর উদ্যোগে মৎস্য খাত এর আওতায় বাজার সংযোগ কর্মশালা অনুষ্ঠিত গাংনীর আকুবপুরে ইটভাটার ট্রাকের ধাক্কায় স্কুল ছাত্র নিহত গাংনীতে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ব্যক্তিদের হামলায় বিএনপির গুরুতর আহত ২ আমাদের কষ্টের ষোলটি বছর কে ফিরিয়ে দেবে? মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

গাংনীতে যুবদল নেতা হত্যা মামলায় তিন আসামী গ্রেফতার

তোফায়েল হোসেন
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৪২ বার পঠিত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাশঁবাড়িয়া গ্রামের যুবদলের নেতা আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় দুই যুবদল নেতাসহ তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে মেহেরপুর সিপিসি ৩ র‍্যাব ১২ এর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারী) বিকেল থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো গাংনী পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও চৌগাছা গ্রামের রইস উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম বিপ্লব (৩৬), গাংনী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডৈর এক নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বাঁশবাড়িয়া পশ্চিম পাড়ার আব্দুল আউয়ালের ছেলে মফিকুল ইসলাম (৩৯), এবং একই উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের কোদাইলকাটি গ্রামের জামাত আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০)।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কমান্ডার আশরাফউল্লাহ পিপিএম মেহেরপুর সিপিসি ৩ র‌্যাব ১২ শুক্রবার (৩ জানুয়ারী) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে আসামী মফিকুল ইসলামের নিকট থেকে গাংনী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড বাঁশবাড়িয়া পশ্চিমপাড়ার আলমগীর হোসেন ২ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করে নাই। আলমগীর হোসেন টাকা পরিশোধের আগেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যায়। আনুমানিক প্রায় তিন মাস আগে আলমগীর হোসেন দুবাই থেকে বাড়িতে ফিরে আসে। আলমগীর হোসেন বাড়িতে আসার পর  মফিকুল ইসলাম একাধিকবার তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলেও সে টাকাটা পরিশোধ না করে নানান টালবাহানা করে আসছে। ঘটনাটি শুরু থেকেই আসামী মফিকুল তার বন্ধু আসামী রবিউল ইসলাম বিপ্লবকে জানায়। আসামী বিপ্লব এবং আসামী কোদালকাটি গ্রামের আলমগীর একাধিকবার আলমগীর হোসেনের নিকট হতে আসামী মফিকুলের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

গত তিন দিন আগে আসামী মফিকুলের সাথে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের টাকা পরিশোধ করাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা হয়। তখন থেকেই আসামীরা আলমগীর হোসেনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারী) রাত ৯ টার দিকে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনকে হত্যা করে। ঘটনাকে অন্য দিকে (পরকীয়া) রুপ দেওয়ার জন্য  থানা রোডে অবস্থিত বিপ্লবের দোকানে বসে নিজ হাতে একটি চিরকুট লেখা হয়। যা আলমগীর হোসেনকে হত্যার পর লাশের পাশে ফেলে রেখে আসে তারা।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি আরো বলেন ঘটনার দিন বিকেলে আসামী বিপ্লবের দোকানে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেন যায় এবং তার সাথে আড্ডা দেয়। ইতোপূর্বে আলমগীর হোসেন তার বন্ধু আসামী বিপ্লবের নিকট টাকা ধার চেয়েছিল। আসামী বিপ্লব তাকে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে গত ১ জানুয়ারী তারিখে সন্ধ্যায় নিজ বাসায় নিয়ে যায়। পরে আসামী মফিকুল তার মোটরসাইকেলে করে আসামী বিপ্লব ও বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীরকে মড়কা বাজারে নিয়ে যায়। মড়কা বাজারে পূর্বে থেকে অবস্থানরত আসামী কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীর ও তার একজন সঙ্গীকে আলাদা একটি মোটরসাইকেলে করে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনসহ মোট পাঁচজন ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে আসামীরা মফিকুলের নিকট হতে ধার নেওয়া টাকা কেন ফেরত দিচ্ছে না এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আসামী কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীর তার শার্টের নিচে লুকিয়ে রাখা দা বের করে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের মাথায় আঘাত করে এবং সবাই মিলে তার মুখ ও হাত পা বেঁধে ফেলে। আসামী বিপ্লব ও আসামী মফিকুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীর হোসেনকে ধরে রাখে এবং কোদাইলকাটি গ্রামের আসামী আলমগীর তার সঙ্গীয় অন্য আসামীসহ আলমগীরকে দা দিয়ে জবাই করে। পরবর্তীতে শহড়াবাড়িয়া- কামারখালী কাঁচা রাস্তার পাশে ড্রেনের মধ্যে তারা লাশ ফেলে পাশে হাতে লেখা চিরকুট রেখে ঘটানাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় ঘটনাস্থল হতে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার দূরে রাস্তার পাশের ঝোপের মধ্যে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আলমগীরকে জবাই করার কাজে ব্যবহৃত দা ফেলে আসে বলে আসামী বিপ্লব স্বীকার করে। এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণে ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি থাকাসহ বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও জানান র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা।

উদ্ধারকৃত আলামত ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ হত্যার ঘটনায় নিহতের পিতা মহিউদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গাংনী থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৪ তারিখঃ ৩ জানুয়ারী ২০২৫ সাল।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মেহেরপুর জেলায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে র‌্যাব আসামীদের গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারীসহ গ্রেফতারের কাজ শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারী) র‍্যাবের টিম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে দুইজন যুবদলের নেতাসহ তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 gangnisongbad.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com
ThemesBazar-Jowfhowo