প্রতিশ্রুতির বন্ধনে”না আমার কোন লেখা নয়। প্রতিশ্রুতির বন্ধনে “নামটি বা শব্দটি অন্যরকম,আলাদা এক ভিন্নতা আছে। নামটিই যেনো ভাবিয়ে তোলে। নামের তাৎপর্য জানতে যে কেউ প্রশ্ন করবেন। বলছিলাম কবি হাসিনা হারভীয়ার কবিতার বই” প্রতিশ্রুতির বন্ধনে”নিয়ে কথা। কবিতার বই নিয়ে কথা আজকাল খুব কম হয় কিংবা কবিতা নিয়ে কোন বিশেষ আলোচনা নেই। এই বইটির বিশেষ কি আছে তা আমি দেখবার চেষ্টা করেছি মাত্র।
প্রচ্ছদ খুব সাদামাটা। যেখানে নামের সাথে মিল রেখে প্রচ্ছদ এঁকেছেন। জীবনের পুরো হিসেবটাই প্রচ্ছদে এসেছে। সম্রাট শাহজাহান এর প্রচ্ছদেই বলে দেয় পুরো জীবনের গল্পটা।
হাসিনা হারভীয়া কবি তার কবিতা প্রায় দিন পড়া হয়। সহজ সরল ভাষায় লেখাগুলো। যা প্রতিটি পাঠক পাঠউদ্ধার করতে পারবে। কবি হাসিনা হারভীয়ার লেখার হাত আছে।
যে কোন বই লেখক উৎসর্গ করেন তাঁর মনের মতো আপনজন যাকে বেঁধে রাখেন মায়ার বন্ধনে তেমন কাউকে।কবি তাঁর বইটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর বান্ধবী মোছা: দিলরুবা কাকলীকে। এখানেও কবি ভালবাসার স্থানটি পরিমাপে বাঁধেননি।
মৃদুল প্রকাশন বইটি প্রকাশ করেছেন প্রকাশকাল ২০২১ ফেব্রুয়ারী। পৃথিবীর ক্রান্তিলগ্নে বইটির জন্ম হলো। সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক পাঠক এবার তাদের পছন্দের বইটি সংগ্রহ করতে না পারলেও অল্প সময়ে কিছু কিছু বই সংগ্রহ করেছেন। এই বইটি রকমারি থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
সূচিপত্র দিয়ে পছন্দ সই কবিতা পড়া যাবে। আজ কাল’ শিরোণামে কবিতায় রোমান্টিকতা প্রকাশ পেয়েছে। “জানো যখন তোমাকে আকড়ে ধরে
তোমার বুকে আমি মুখ লুকাই
তখন তুমি তোমার সমস্ত ভালোবাসাগুলো
আমাকে উজার করে দাও তখন
আমার সমস্ত কষ্টগুলো কোথায় যেনো
হারিয়ে যায় দূরে বহুদূরে
এই লাইনগুলো চাওয়ার জন্য আঁকুতি এর বেশী কিভাবে স্পষ্ট করা যায়। নিজের কথাগুলো সরলভাবে উপস্থাপন করেছেন। আবার অন্য একটি কবিতায় কষ্ট নিয়ে লিখেছেন” কিছু কিছু ব্যাথা হৃদয়ে থাকে গাঁথা
প্রতিটি মুহূর্তে বুকের ক্ষতটা বাড়িয়ে তোলে
তাতে খুব,কষ্ট খুব কষ্ট হয়
হাজার ব্যস্ততার মাঝেও কেনো যেনো
একটু স্বস্তি পাওয়া যায় না,
কষ্টের এই অনুভুতিগুলো হৃদয়কে স্পর্শ করে যায়।নিজস্ব কিছু যাতনা একা একা ভার বইতে হয় সে কথাই উঠে এসেছে।
চাওয়া পাওয়ার টানপোড়ন আছে লেখায়।
ত্রিশ পৃষ্ঠায় আছে “পিতা” শিরোণামে লেখা কবিতা। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা। অবশ্য কবিতাটি আরও একটু ভাবগম্ভির্য থাকলে পাঠককে নিয়ে যেতো সেই পচাত্তরে। কবিতাটি ভালো হয়েছে। এমন কবিতা নিয়ে কোন মন্তব্যই করা যায় না।
“প্রতিশ্রুতির বন্ধনে’শিরোণামে একটি কবিতা আছে, যে কবিতার নামেই বইটির নামকরণ করা হয়েছে।একজনকে উদ্দেশ্য করে লেখা প্রতিটি শব্দের পরতে পরতে ভালোলাগা,মনের গভীরের কথা বলেছেন। কোন কিছু ভালোলাগার এক উপমা। একবার নয় এই কবিটি বারবার পড়তে ইচ্ছে করবে। “সে আমার ভালোলাগার
এক হিমালয় বিকাল
আমার মনের এক বিন্দু সিক্ত হাওয়া
আমার ঘুম ভাঙানোর এক অশুভ সকাল
সে আমার রাতজাগা ঘুমহীন
স্বপ্ন আঁকার এক রাত।
এই যে শেষ লাইন,এখানেই মুগ্ধতা রেখে যেতে হয়। কবিতা নয় যেনো এক একটি গল্প উপন্যাস।বইয়ে মোট তেষট্রি কবিতা আছে।চৌষট্রি পৃষ্ঠার বইটিতে প্রথমেই দু’টি কথা লিখেছেন সম্মানিত কবি ও সহকারি অধ্যাপক আসিফ জাহান।সংক্ষিপ্ত কথা কিন্তু অনেক বলা হয়েছে কবিতা ও কবিকে নিয়ে। তিঁনি লিখেছেন “ঈর্ষান্বিত চোখে তাঁকে না দেখে বরং ভালোবাসার বাসন্তি রঙে রাঙালে তার এ সৃজনশীল পথচলা সহজ হবে। কল্পনার হাত ধরাধরি করেই এ পথে যাত্রা তার”
স্যার আসিফ জাহান এই উক্তিতেই সব বলে দিয়েছেন। আমার মনে হয় একজন গুণীজনের এমন কথাই একজন লেখকের বিরাট প্রাপ্তি।
শেষ ফ্লাপে প্রকাশক এম.সহিদুল ইসলাম কবি হাসিনা হারভীয়ার জীবন বিত্তান্ত ও লেখার আলোচনা করেছেন। কবিতার বইটি মূল্য ধরেছেন এক শত পঞ্চাশ টাকা। এই কবিতার বই “প্রতিশ্রুতির বন্ধনে”কবি হাসিনা হারভীয়াকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।