মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে জমির দখল নিতে চাষী আজাদ আলীর এক একর জমির (আংশিক) পাট ক্ষেত নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কাজিপুর মৌজার ৩৭৫৪ খতিয়ানে ৬০৭৪ ও ৬০৭৭ নম্বর দাগে এ ঘটনা ঘটে। আজাদ আলীর অভিযোগ, বৈধ কাগজ না থাকলেও ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি ধামকি দিয়ে জোরপূর্বক এসব জমির দখল নিতে চাইছেন কাজিপুর গ্রামের মৃত ছলিম মন্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলাম মোকলেস ও তার সহযোগীরা। তবে, ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে নিজেদেরকেই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।
চাষী আজাদ আলী জানান, প্রায় ৬৫ বছর যাবৎ বংশপরম্পরায় ওই জমিতে চাষাবাদ ও ভোগ দখল করে আসছেন তারা। জমির মালিকানা সত্ত্বের দলিল ও রেকর্ডসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও প্রমাণাদি রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
তিনি আরো জানান, গত তিন মাস আগে একই এলাকার ছলিম মন্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলাম মকলেস ও তার কয়েকজন সহযোগীরা ওই জমির মালিকানা দাবি করলে কাজিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রউফ স্বপন এর নেতৃত্বে স্থানীয় রেজাউল ইসলামের চায়ের দোকানে গত ২ মাস আগে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শনিবার (১৭ জুলাই) উভয় পক্ষের দলিল ও প্রমাণাদিসহ দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেন কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলম হুসাইন, কাজিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রউফ স্বপন, কাজিপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য খবির উদ্দিন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আলিম, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি তাহাজউদ্দিন, শাহজামাল প্রমুখ। এ সময় সালিশী ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের দলিল ও প্রমাণাদি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ সময় আমিরুল ইসলাম পক্ষের লোকজন তাদের প্রমাণাদি দেখাতে ব্যর্থ হয়।
ফলে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চাষী আজাদ আলী পূর্বের ন্যায় ওই জমিতে চাষাবাদ ও জমি ভোগ দখল করবে মর্মে মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়। সেই সাথে আমিরুল ইসলাম মকলেস ও তার সহযোগীদের আইনের দারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অথচ সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে রোববার (১৭ জুলাই) সকাল ৮ টার দিকে আমিরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা প্রদর্শন করে হুমকি ধমকি দিয়ে জোরপূর্বক পাটক্ষেত কাটতে শুরু করলে আজাদ আলীর পরিবারের সদস্য ৯৯৯ ফোন দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় গাংনী থানা পুলিশের ভবানীপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ জহির রায়হান এর হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক জানান, কাজীপুর এলাকায় কৃষকের পাট ক্ষেত জোরপূর্বক কেটে নেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভবানীপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ জহির রায়হানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যারা ৬৫ বছর যাবৎ জমি চাষাবাদ ও ভোগ দখল করছে তারাই ভোগ দখল করবে এবং আমিরুল ইসলামকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে মামলা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।