থানা কম্পাউন্ডে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন একজন কনস্টেবল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা কালীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। এ নির্দেশনায় ১৫ নম্বরে জমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত ও ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত শাকসবজি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এর সকল বাস্তবায়নে পরিত্যক্ত জমি ছাড়াও অনেকে ঘরের ছাদে বাগান করার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন।
এমন একজন সফল উদ্যোক্তা থানা চত্বরে পরিত্যক্ত জায়গা পরিষ্কার করে নানা ধরনের সবজির চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এ যেন এক সবুজের সমারোহ। এই সবজি ক্ষেত থেকেই থানার সংশ্লিষ্টরা অধিকাংশ সবজির চাহিদা পূরণ করছেন।
বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী থানার কথা। থানা চত্বরে প্রায় ৮০ শতক পরিত্যক্ত জায়গা পরিষ্কার করে থানার পুলিশ (কনস্টেবল) শহিদুল ইসলাম শহীদ এর উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করা হয়েছে।
রোববার (৩১ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, থানা চত্বরে দৃষ্টিনন্দন ও সুসজ্জিত দু’টি সবজির ক্ষেত। এখানে পুঁইশাক, মরিচ, ওল, মান কচু, করলা, লাউ, পেঁপে, কাঁচা কলা, বেগুন, ও ঢেঁড়স থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করা হয়েছে। থানার সংশ্লিষ্টরা বাজার থেকে সবজি না কিনে এখান থেকে অধিকাংশ সবজির চাহিদা মেটাচ্ছেন।
গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গাংনী থানার কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম শহীদ বর্তমানে মেহেরপুর পুলিশের বিশেষ শাখা ডিএসবিতে কর্মরত রয়েছেন। তার পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে ও নিজস্ব আর্থিক সহায়তায় থানা কম্পাউন্ডের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন দু’টি সবজি বাগান তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে তিনি সত্যিই প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। তাছাড়া এখান থেকে টাটকা, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ক্ষতিকর কীটনাশকমুক্ত সবজি অনায়াসে পেয়ে থাকি। থানার সংশ্লিষ্টরা প্রায় সকলেই এখান থেকে সবজি তুলে নিজেদের চাহিদা মেটায়। বাজারের সবজি কেনা লাগে না বললেই চলে। দেশের প্রত্যেকটা থানা কমপাউন্ডে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে প্রয়োজনীয় সবজি চাহিদার অধিকাংশই ঘাটতি পূরণ হবে বলেও মতামত ব্যক্ত করুন তিনি।
সবজি ক্ষেতের উদ্যোক্তা কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি ব্যক্তিগতভাবে থানার পরিত্যক্ত জায়গাগুলোতে বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন। এখানে আবাদ করা টাটকা, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ক্ষতিকর কীটনাশকমুক্ত সবজি থানার সংশ্লিষ্টরা বিনা মূল্যে নিয়ে যায়। বাজার থেকে কেনা লাগছে না। শুধু পুলিশ নয়, প্রত্যেকটি মানুষ যদি তার নিজ নিজ পরিত্যাক্ত জমিতে এভাবে সবজির চাষ করে তাহলে পরিবারের পাশাপাশি দেশেরও অধিকাংশ সবজির চাহিদা পূরণ হবে।
কনস্টেবল শহিদুল ইসলামের এমন মহতি উদ্যোগে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। সেই সাথে এলাকার মানুষও সাধুবাদ জানিয়েছেন পুলিশের ওই সদস্য শহিদুল ইসলামকে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঞ্চি জমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এরই যথার্থ বাস্তবায়ন ঘটেছে গাংনী থানা কম্পাউন্ডে সবজি চাষে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। এ বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সকলকে বাড়ির আনাচে-কানাচে সবজি চাষে উদ্যোগী হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।